ধনতেরস বা
ধন ত্রয়োদশী
দাম বাড়ুক বা কমুক, তার টান কখনও কমে না। সেই অমোঘ টানেই ক্রেতারা হাজির দোকানে দোকানে৷ চাই-ই চাই এক টুকরো সোনা৷ ধনতেরসে দেশজুড়ে সম্পদ-সন্ধান।
ধনসম্পত্তির কামনায় ধনদেবীকে তুষ্ট করার বহু পুরনো প্রথা৷ ধনতেরস মূলত উত্তর ও পশ্চিম ভারতীয় উত্সব। এখন সর্বজনীন৷ বারো মাসে তের পার্বণে অভ্যস্ত বাঙালির ঘরেও এখন ধনতেরস। হিন্দু বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী, কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষের ত্রয়োদশীতে পালিত হয় ধনতেরস৷ ধন = সম্পদ। তেরস = ত্রয়োদশী তিথি। বিশ্বাস, কালীপুজোর আগে বিশেষ এই দিনে এক টুকরো সোনা বা চাঁদি কিনলেই লক্ষ্মীলাভ৷ সবাই চান, শুভ দিনে ঘরে আসুক সম্পদ। যাতে সারা বছরের জন্য নিশ্চিত হয় সম্পদ-বৃদ্ধির সম্ভাবনা। তাই সোনার দোকানগুলিতে উপচে পড়ে ভিড়। ধনতেরসের শুভক্ষণে এক টুকরো সোনা বা চাঁদি না কিনলেই নয়৷
পুরাণে আছে, অসুররা যখন স্বর্গ দখল করে, লক্ষ্মী সহ দেবতাকুল আশ্রয় নেয় সমুদ্রের তলায়। রাক্ষসদের সঙ্গে লড়াই করে সমুদ্র মন্থনের পর ধনতেরসেই দেবতারা ফিরে পান দেবী লক্ষ্মীকে। তাই হারিয়ে যাওয়া লক্ষ্মীকে ফিরিয়ে আনার উপাসনাই হচ্ছে ধনতেরস। সমুদ্র মন্থনেই অমৃতের কলস হাতে উঠে আসেন দেবতাদের চিকিত্সক ধ্বন্বন্তরী। প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী, কার্তিক মাসের অমাবস্যায় বাসুকীরাজের সহস্র ফণার ছাতা মাথায় উঠে আসেন মা লক্ষ্মী। সমুদ্র গর্ভ থেকে ধন্বন্তরী অমৃত কলস নিয়ে উঠ এসেলেন বলে ধনতেরসের সময় বাসন কেনার পরম্পরা রয়েছে। ধন্বন্তরী দেবতাদের বৈদ্য এবং চিকিত্সার দেবতা। তাই বিশ্বাস, দিনট চিকিত্সকদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। আরও বিশ্বাস, ধনতেরসের দিনে যে ধন সম্পত্তি কেনা হয়, তা ১৩ গুণ বৃদ্ধি পায়। এই সময়ে অনেকে বীজও কিনে রাখেন বাড়িতে। দীপাবলির পর সেই বীজ বাগানে পুঁতে দেন। শুধু সোনা নয়, ধনতেরসে রুপো কেনাও শুভ বলে মনে করা হয়। লক্ষ্মী বা গণেশ পুজোর জন্য অনেকে এই দিনে মূর্তি কিনে রাখেন। সোনা-রুপো-দেবদেবীর মূর্তির পাশাপাশি, তেলের প্রদীপ, ধাতুর ঘণ্টা বা জমিজমাও কেনা শুভ বলে ধরা হয়।
কথিত আছে, সীতা ও লক্ষ্মণকে নিয়ে ত্রয়োদশীতেই অযোধ্যায় ফেরেন রামচন্দ্র। সীতা অর্থাত্ লক্ষ্মীর ঘরে ফেরার পরই সমৃদ্ধি ফেরে অযোধ্যার। তাই বিশেষ এই দিনটি। অমাবস্যার আগে থেকে লক্ষ্মী আসা নিশ্চিত করতে শুরু হয় উত্সব। শুরু হয় ধনতেরস। ধনতেরসের সন্ধে নাগাদ ঘরের মূল দরজা এবং আঙিনায় জ্বালানো হয় প্রদীপ। কথিত আছে, কার্তিক কৃষ্ণ পক্ষের রাতে যে ব্যক্তি যমের নামে পুজো করে দক্ষিণ দিকে দীপ প্রজ্জ্বলিত করেন, তিনি অকালমৃত্যু থেকে মুক্তি পান।
ধনতেরস নিয়ে প্রতচলিত আছে অনেক গল্প।
কথিত আছে, রাজা হিমের ১৬ বছরের ছেলের এক ফাঁড়া বা অভিশাপ ছিল। জন্মকুণ্ডলীতে না কি লেখা ছিল, বিয়ের চার দিনের মাথায় সাপের কামড়ে তাঁর মৃত্যু হবে। তাঁর স্ত্রীও জানতেন সেই কথা। স্বামীকে যমের হাত থেকে বাঁচাতে বিয়ের চতুর্থ দিন নববধূ একটি ফন্দি আঁটেন। সেই অভিশপ্ত দিনে তিনি তাঁর স্বামীকে ঘুমোতে দেননি। শোয়ার ঘরের বাইরে তিনি সাজিয়ে রাখেন সমস্ত গয়না ও সোনা-রুপোর মুদ্রা। সেই সঙ্গে সারা ঘরে জ্বেলে দেন বাতি। জাগিয়ে রাখতে স্বামীকে তিনি সারারাত গল্প শোনান, গান শোনান। পরের দিন যখন মৃত্যুর দেবতা যম তাঁদের ঘরের দরজায় আসেন, তখন আলো আর গয়নার জৌলুসে তাঁর চোখ ধাঁধিয়ে যায়। রাজপুত্রের শোয়ার ঘর পর্যন্ত তিনি পৌঁছন ঠিকই। কিন্তু সোনার উপর বসে গল্প আর গান শুনেই তাঁর সময় কেটে যায়। সকালে কাজ অসম্পূর্ণ রেখেই ফিরে যান তিনি। মৃত্যুর সময় পেরিয়ে যাওয়ায় বেঁচে যান রাজা হিমের পুত্র। সেই দিনটি ছিল ত্রয়োদশী তিথি। কথিত আছে, এই ঘটনা থেকেই শুরু হয় ধনতেরস।
কথিত আছে, রাজা হিমের ১৬ বছরের ছেলের এক ফাঁড়া বা অভিশাপ ছিল। জন্মকুণ্ডলীতে না কি লেখা ছিল, বিয়ের চার দিনের মাথায় সাপের কামড়ে তাঁর মৃত্যু হবে। তাঁর স্ত্রীও জানতেন সেই কথা। স্বামীকে যমের হাত থেকে বাঁচাতে বিয়ের চতুর্থ দিন নববধূ একটি ফন্দি আঁটেন। সেই অভিশপ্ত দিনে তিনি তাঁর স্বামীকে ঘুমোতে দেননি। শোয়ার ঘরের বাইরে তিনি সাজিয়ে রাখেন সমস্ত গয়না ও সোনা-রুপোর মুদ্রা। সেই সঙ্গে সারা ঘরে জ্বেলে দেন বাতি। জাগিয়ে রাখতে স্বামীকে তিনি সারারাত গল্প শোনান, গান শোনান। পরের দিন যখন মৃত্যুর দেবতা যম তাঁদের ঘরের দরজায় আসেন, তখন আলো আর গয়নার জৌলুসে তাঁর চোখ ধাঁধিয়ে যায়। রাজপুত্রের শোয়ার ঘর পর্যন্ত তিনি পৌঁছন ঠিকই। কিন্তু সোনার উপর বসে গল্প আর গান শুনেই তাঁর সময় কেটে যায়। সকালে কাজ অসম্পূর্ণ রেখেই ফিরে যান তিনি। মৃত্যুর সময় পেরিয়ে যাওয়ায় বেঁচে যান রাজা হিমের পুত্র। সেই দিনটি ছিল ত্রয়োদশী তিথি। কথিত আছে, এই ঘটনা থেকেই শুরু হয় ধনতেরস।
কীভাবে ধনতেরস পালন করবেন?
ধনতেরসের আগে সারা বাড়ি খুব ভালভাবে পরিষ্কার করতে হয়। ধনতেরসের দিন সারা বাড়ি, বিশেষ করে মূল প্রবেশ পথের ওপর রঙ্গোলি বা আল্পনা দিতে হয়। লাল রঙের গুঁড়ো দিয়ে আঁকতে হয় দেবী লক্ষ্মীর পা। এরপর নিজের মতো করে দেবীকে পুজো করতে হয়।
ধনতেরসের পুজো পদ্ধতি
প্রথমে একটি লাল রঙের কাপড় নিতে হয়। তারপর নিতে হয় নতুন কেনা ঘট বা বাটি। ঘট বা বাটির মধ্যে চাল দিয়ে পাঁচটি সুপারি এবং ২১টি পদ্মবীজ দিতে হয়। অন্য একটি ঘটিতে গঙ্গাজল নিয়ে তার মধ্যে দিতে হয় চিনি এবং সোনা বা রুপোর পয়সা। জলের ওপরে ফুল বা মালা। ঘরে যে লক্ষ্মী দেবী এবং গণেশের মূর্তি বা মুদ্রা আছে, নতুন কেনা সোনা বা রুপোর গয়না রাখতে হবে তার ডানদিকে। সাধ্য মতো সাজিয়ে দিয়ে হবে মিষ্টি এবং নৈবেদ্য। নতুন প্রদীপ এমন ভাবে জ্বালাতে হবে, তা যেন টানা দু’ ঘণ্টা জ্বলে। অনেকে বাড়ির প্রতি সদস্যের নামে প্রদীপ জ্বালান। পূর্ব পুরুষকে স্মরণ করে গঙ্গায় বা নদীতে প্রদীপ ভাসানোর প্রথাও আছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এদিন গরুকে খাওয়ানো হয়। কেউ কেউ বাড়িতে কাঙালি ভোজনও করান।
ধনতেরস পুজোর সঠিক সময়
ধনতেরাস করার সবথেকে উপযোগী সময় প্রদোষ কাল বা স্থির লগ্ন। প্রদোষ কাল বলতে বোঝায়, সূর্য অস্ত যাওয়ার পরবর্তী ২ ঘণ্টা ২৪ মিনিট সময়কে। ঠিক এই সময় লক্ষ্মীদেবীর আরাধনা করা হয় এবং মনে করা হয় যে, এই সময়ে পুজো করলে ঘরে লক্ষ্মী স্থির থাকেন।
ত্রয়োদশীর নির্ঘণ্ট ও সময়সূচি-২০১৯
বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা মতে:
ত্রয়োদশী তিথি আরম্ভ:
বাংলা তারিখ: ৭ কার্তিক ১৪২৬, শুক্রবার।
ইংরেজি তারিখ: ২৫/১০/২০১৯।
সময়: সন্ধ্যা ঘ ৭/৮ মিনিট থেকে।
ত্রয়োদশী তিথি শেষ:
বাংলা তারিখ: ৮ কার্তিক ১৪২৬, শনিবার।
ইংরেজি তারিখ: ২৬/১০/২০১৯।
সময়: দুপুর ঘ ৩/৪৭ মিনিট পর্যন্ত।
গুপ্তপ্রেস পঞ্জিকা মতে:
ত্রয়োদশী তিথি আরম্ভ:
বাংলা তারিখ: ৭ কার্তিক ১৪২৬, শুক্রবার।
ইং তারিখ: ২৫/১০/২০১৯।
সময়: বিকাল ঘ ৪/২৪ মিনিট থেকে।
ত্রয়োদশী তিথি শেষ:
বাংলা তারিখ: ৮ কার্তিক ১৪২৬, শনিবার।
ইং তারিখ: ২৬/১০/২০১৯।
সময়: দুপুর ঘ ০২/০১ মিনিট পর্যন্ত।
ধনতেরাসের কেনাকাটা করার শুভক্ষণ:
বাংলা তারিখ: ৭ কার্তিক ১৪২৬, শুক্রবার।
ইং তারিখ: ২৫/১০/২০১৯।
শুভক্ষণ: সন্ধ্যা ঘ ৭/৮ মিনিট থেকে রাত ঘ ৮/২২ মিনিট পর্যন্ত কেনাকাটা করার শুভ সময়। এই সময়ের মধ্যে পবিত্র কিছু জিনিস কিনলে লক্ষ্মীর আগমন ঘটে বলে মনে করা হয়।
সমুদ্রের ক্ষীরসাগর থেকে উঠে এসেছিলেন মহালক্ষ্মী। অমাবস্যার অন্ধকার থাকায় লক্ষ্মীকে বরণ করে স্বর্গে ফিরিয়ে নেওয়ার অনুষ্ঠানে আলোকমালায় সজ্জিত করা হয় স্বর্গকে।
ধনতেরসের আগে সারা বাড়ি খুব ভালভাবে পরিষ্কার করতে হয়। ধনতেরসের দিন সারা বাড়ি, বিশেষ করে মূল প্রবেশ পথের ওপর রঙ্গোলি বা আল্পনা দিতে হয়। লাল রঙের গুঁড়ো দিয়ে আঁকতে হয় দেবী লক্ষ্মীর পা। এরপর নিজের মতো করে দেবীকে পুজো করতে হয়।
ধনতেরসের পুজো পদ্ধতি
প্রথমে একটি লাল রঙের কাপড় নিতে হয়। তারপর নিতে হয় নতুন কেনা ঘট বা বাটি। ঘট বা বাটির মধ্যে চাল দিয়ে পাঁচটি সুপারি এবং ২১টি পদ্মবীজ দিতে হয়। অন্য একটি ঘটিতে গঙ্গাজল নিয়ে তার মধ্যে দিতে হয় চিনি এবং সোনা বা রুপোর পয়সা। জলের ওপরে ফুল বা মালা। ঘরে যে লক্ষ্মী দেবী এবং গণেশের মূর্তি বা মুদ্রা আছে, নতুন কেনা সোনা বা রুপোর গয়না রাখতে হবে তার ডানদিকে। সাধ্য মতো সাজিয়ে দিয়ে হবে মিষ্টি এবং নৈবেদ্য। নতুন প্রদীপ এমন ভাবে জ্বালাতে হবে, তা যেন টানা দু’ ঘণ্টা জ্বলে। অনেকে বাড়ির প্রতি সদস্যের নামে প্রদীপ জ্বালান। পূর্ব পুরুষকে স্মরণ করে গঙ্গায় বা নদীতে প্রদীপ ভাসানোর প্রথাও আছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এদিন গরুকে খাওয়ানো হয়। কেউ কেউ বাড়িতে কাঙালি ভোজনও করান।
ধনতেরস পুজোর সঠিক সময়
ধনতেরাস করার সবথেকে উপযোগী সময় প্রদোষ কাল বা স্থির লগ্ন। প্রদোষ কাল বলতে বোঝায়, সূর্য অস্ত যাওয়ার পরবর্তী ২ ঘণ্টা ২৪ মিনিট সময়কে। ঠিক এই সময় লক্ষ্মীদেবীর আরাধনা করা হয় এবং মনে করা হয় যে, এই সময়ে পুজো করলে ঘরে লক্ষ্মী স্থির থাকেন।
ত্রয়োদশীর নির্ঘণ্ট ও সময়সূচি-২০১৯
বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা মতে:
ত্রয়োদশী তিথি আরম্ভ:
বাংলা তারিখ: ৭ কার্তিক ১৪২৬, শুক্রবার।
ইংরেজি তারিখ: ২৫/১০/২০১৯।
সময়: সন্ধ্যা ঘ ৭/৮ মিনিট থেকে।
ত্রয়োদশী তিথি শেষ:
বাংলা তারিখ: ৮ কার্তিক ১৪২৬, শনিবার।
ইংরেজি তারিখ: ২৬/১০/২০১৯।
সময়: দুপুর ঘ ৩/৪৭ মিনিট পর্যন্ত।
গুপ্তপ্রেস পঞ্জিকা মতে:
ত্রয়োদশী তিথি আরম্ভ:
বাংলা তারিখ: ৭ কার্তিক ১৪২৬, শুক্রবার।
ইং তারিখ: ২৫/১০/২০১৯।
সময়: বিকাল ঘ ৪/২৪ মিনিট থেকে।
ত্রয়োদশী তিথি শেষ:
বাংলা তারিখ: ৮ কার্তিক ১৪২৬, শনিবার।
ইং তারিখ: ২৬/১০/২০১৯।
সময়: দুপুর ঘ ০২/০১ মিনিট পর্যন্ত।
ধনতেরাসের কেনাকাটা করার শুভক্ষণ:
বাংলা তারিখ: ৭ কার্তিক ১৪২৬, শুক্রবার।
ইং তারিখ: ২৫/১০/২০১৯।
শুভক্ষণ: সন্ধ্যা ঘ ৭/৮ মিনিট থেকে রাত ঘ ৮/২২ মিনিট পর্যন্ত কেনাকাটা করার শুভ সময়। এই সময়ের মধ্যে পবিত্র কিছু জিনিস কিনলে লক্ষ্মীর আগমন ঘটে বলে মনে করা হয়।
সমুদ্রের ক্ষীরসাগর থেকে উঠে এসেছিলেন মহালক্ষ্মী। অমাবস্যার অন্ধকার থাকায় লক্ষ্মীকে বরণ করে স্বর্গে ফিরিয়ে নেওয়ার অনুষ্ঠানে আলোকমালায় সজ্জিত করা হয় স্বর্গকে।
কালী করেন অশুভ শক্তির বিনাশ আর লক্ষ্মী ঘটান শ্রীবৃদ্ধি।
তাই দীপাবলির দু'দিন আগে শুরু হয়ে যায় ধনতেরস।
শুরু হয় কেনাকাটা।
- Subscribe: https://www.youtube.com/c/RAJATKANTIBERA
- Blog: http://rajatkb.blogspot.com
- Google Plus: https://plus.google.com/u/0/
- Linkedin: https://www.linkedin.com/in/rajatkanti-bera-275134139/
- Facebook: https://www.facebook.com/rajatkanti.bera
No comments:
Post a Comment