Wednesday, November 15, 2017

Who is the inventor of Rasogolla? রসগোল্লা বাংলারই আবিষ্কার

ওড়িশা নয়, রসগোল্লা বাংলারই

শেষ হল দীর্ঘ দড়ি টানাটানি,
রসনার রণক্ষেত্রে বঙ্গের কলিঙ্গ বিজয়


রসগোল্লার আবিষ্কারক কে, তা নিয়ে নানা মুনির নানা মত। তবে ইতিহাসবিদদের মতে, রসগোল্লার জন্ম যে বাংলায়, তা নিয়ে কোনও বিতর্ক নেই। এ নিয়ে শোনা যায় নানা মজার গল্পও।



‘রসের গোলক এত রস তুমি ধরিয়াছ হায়,
ইতালির লোক ধর্ম ভুলিয়া লুটাইল তব পায়।’

রসগোল্লার মাহাত্ম্য এভাবে বর্ণনা করেছেন সৈয়দ মুজতবা আলি।

ইতিহাসবিদের দাবি, রসগোল্লার আবিষ্কার যে এই পশ্চিমবঙ্গে তা নিয়ে কোনও বিতর্ক থাকতে পারে না। তবে আবিষ্কারক কে তা নিয়ে নানা মত আছে। একাংশের মতে, কলকাতার বেনিয়াটোলার সীতারাম ঘোষ স্ট্রিটের দীনু ময়রার পূর্বপুরুষ ব্রজ ময়রা ১৮৬৬ সালে হাইকোর্টের কাছে একটি দোকানে প্রথম রসগোল্লা আবিষ্কার করেন। অন্য একটি মতে নদিয়া জেলার ফুলিয়ার হারাধন ময়রা ১৮৪৬-৪৭ সালে প্রথম রসগোল্লা তৈরি করেন।




গবেষকরা বলেন, বাগবাজারের নবীনচন্দ্র দাস ১৮৬৮ সালে স্পঞ্জ রসগোল্লা তৈরি করেন। ১৮৬৪ সালে জোড়াসাঁকোতে একটি মিষ্টির দোকান খোলেন চিনি ব্যবসায়ী নবীনচন্দ্র। তবে দোকান খোলার পরই তিনি ব্যবসা থেকে সরে যান। দু’ বছর পর আবার বাগবাজারে আরেকটি মিষ্টির দোকান দেন তিনি। আর সেখানেই নবিন চন্দ্র প্রথম রসগোল্লা বানিয়েছিলেন।

গরম ছানা এবং চিনির রস নিয়ে নানা গবেষণা চালাতেন নবীনচন্দ্র। তিনি ছানা দিয়ে গোলাকার বল তৈরি করতেন। কিন্তু তা গোলাকার হয়ে থাকতো না, ভেঙে যেত। অবশেষে ছানার মধ্যে উপস্থিত এক ধরনে উৎসেচক থেকেই সমস্যার সমাধান করলেন। এরপর থেকে ছানার গোল্লা ভেঙে যেতো না। ব্যবসা এগিয়ে নিতে এই পদ্ধতি নবীন শিখিয়েছিলেন অন্যান্য মিষ্টির দোকানের মালিকদের।

আরেকটি জনপ্রিয় কাহিনী প্রচলিত রয়েছে। রানাঘাটের পল চৌধুরিস-এর পূর্ব পুরুষ হারাধন ময়রা প্রথম রসগোল্লা বানান। চিনির রসে দুর্ঘটনাক্রমে কিছু ছানার গোল্লা পড়ে যায়। আর তাই হয়ে যায় রসগোল্লা। উনিশ এবং বিশ শতকের সময় দুটো নামকরা কনফেকশনারি 'মল্লিকস অব ভবানিপুর (পরে বলরাম নাম গ্রহণ করে)' এবং শোভানগরের 'চিত্তরঞ্জন মিষ্টান্ন ভাণ্ডার' রসগোল্লাকে বেশ ছড়িয়ে দেয়। তবে কেসি দাস ক্যানজাত রসগোল্লা বিদেশে রপ্তানি করতে শুরু করেন এবং তা গোটা বিশ্বে পরিচিত হয়ে ওঠে।




প্রথম স্পঞ্জ রসগোল্লা তৈরির গল্পটাও রীতিমতো মজার!
অনেকে বলেন, ভাগ্যিস সেদিন এক ব্রিটিশ সাহেব নবীন ময়রাকে তাড়া দিয়েছিলেন! শোনা যায়, একদিন দুপুরে চিৎপুরে নবীন ময়রার দোকানের সামনে এসে দাঁড়ায় এক ব্রিটিশ সাহেবের জুড়িগাড়ি। নবীনচন্দ্র দাসের হাতে তখন ছানার ডেলা। এদিকে সাহেব তাড়া দিচ্ছেন। কিছু না ভেবে ছানার ডেলা ফুটন্ত রসে ফেলে নবীনচন্দ্র দাস ছুটে যান সাহেবের কাছে।
কথাবার্তা বলে ফিরে এসে দেখেন, সেই ছানার ডেলা বেশ নরম তুলতুলে হয়ে গেছে। কড়াই থেকে তুলে ঠান্ডা করে মুখে ফেলতেই একেবারে গলে যায় সেই মিষ্টি। এভাবেই নাকি ব্রিটিশ সাহেবের তাড়ায় প্রথম জন্ম নেয় স্পঞ্জ রসগোল্লার।




অবশ্য অন্য একটি গল্পও শোনা যায়।
একদিন দুপুরে কাজ শেষ। খেয়ালের বশে একটি ছানার গোল্লাকে চিনির রসে ফেলে ভেজে ফেলেন নবীনচন্দ্র দাস। এভাবেই জন্ম নেয় স্পঞ্জ রসগোল্লা। কিন্তু, এই নতুন মিষ্টি জনপ্রিয় হবে কিনা, তা নিয়ে সংশয়ে ছিলেন নবীন ময়রা। তাই অন্য মিষ্টির সঙ্গে এটি বিক্রি করতেন না। একদিন সকালে নবীনচন্দ্রের বাগবাজারের দোকানের সামনে এসে থামে আর একটি জুড়িগাড়ি। গাড়িতে ছিলেন ধনি ব্যবসায়ী ভগবান দাস বাগলা। ভগবান দাসের এক ছেলের খুব জলতেষ্টা পেয়েছিল। নবীনচন্দ্র তাকে জলের সঙ্গে একটি রসগোল্লা দেন। ছেলেটি নতুন ধরনের মিষ্টি দেখে একটু থমকালেও খেয়ে একেবারে আহ্লাদিত হয়ে পড়ে। ছেলের কথায় ভগবান দাসও রসগোল্লা খেয়ে বাক্যহারা হয়ে পড়েন। বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজনের জন্য কিনে নেন আরও কয়েক হাঁড়ি। কার্যত ওই দিন থেকেই শুরু হয় রসগোল্লার সাম্রাজ্য বিস্তার।

রসগোল্লা যে বঙ্গের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ তার প্রমাণ মিলেছিল ১৯৬৭ সালে।
দুধের যোগান কমে যাওয়ায় তৎকালীন রাজ্য সরকারের নির্দেশে সন্দেশ-রসগোল্লা সহ ছানার মিষ্টি তৈরি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। উপেন্দ্রনাথ মল্লিক তা নিয়ে ব্যঙ্গ কবিতায় লিখেছিলেন,

সন্দেশ কাঁদিয়া কহে রসগোল্লা ভাই,
দেশ ছেড়ে চল মোরা ভিন্ন দেশে যাই।
এই রাজ্যে শুনি না কি দুধের দরকার,
আমাদের দূর তাই করিল সরকার।

আদি রসগোল্লা এখনকার মতো দুধসাদা ছিল না। যত দিন গিয়েছে, রসগোল্লার রূপ ততই খুলেছে।



2 comments:

  1. Google was founded in 1998 by Larry Page and Sergey Brin while they were Ph.D. students at Stanford University in California.

    ReplyDelete
  2. সুন্দর পোষ্ট । ভালো লাগলো । ধন্যবাদ আপনাকে । বগুড়ার বিখ্যাত দই এবং ৫০+ রকমের সু-স্বাদু মিষ্টি নিয়ে এই সাইটটি দেখতে পারেন ।
    "অনলাইন দই & মিষ্টি সার্ভিস"

    ReplyDelete

Popular Posts

বাংলার ঘরে ঘরে আজ শিবরাত্রি পুরাণ মতে, শিবকে পতি রূপে পাওয়ার জন্য রাত জেগে উপবাস করে শিবের আরাধনা করেছিলেন দেবী পার্বতী৷ তারপর থেকেই ...