একবার আসে মায়ের সঙ্গে
একবার আসে একলা...’
গণেশ পুজোর সময় ছোটবেলায় মুখে মুখে ঘুরত ছড়াটা। তখন মানে না বুঝেই বলতাম, বড় হয়ে দেখলাম, ঠিকই তো, শারোদত্সবের মাসখানেক আগেই আসে গণেশ। ভাদ্র মাসের শুক্লপক্ষের চতুর্থীতে হয় গণপতি বাপ্পার পুজো। তাই বলা হয়, গণেশ চতুর্থী। ইংরেজি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, দিনটি ২০ অগস্ট থেকে ১৫ সেপ্টেম্বরের মাঝে কোনও এক দিন পড়ে। পুরাণ মতে, সখি জয়া ও বিজয়া দেবী পার্বতীকে পরামর্শ দেন, মহাদেবের যেমন নন্দি-ভৃঙ্গি রয়েছে, যারা সব সময় দেবাদিদেবের কথা মেনে চলে। পার্বতীরও এমন একজন থাকা উচিত যে দেবীর কথা মেনে চলবে। তখন নাকি, যে চন্দনবাটা গায়ে মেখেছিলেন পার্বতী, তা দিয়েই তিনি তৈরি করেন এক বালক মূর্তি। তারপর তাতে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করেন। কৈলাসে ফেরার পর একটি গুহার সামনে এক বালককে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন। সেই গুহার ভেতরে ছিলেন পার্বতী। পার্বতী গণেশকে বলেছিলেন, কেউ যেন গুহায় ঢুকতে না পারে। মায়ের আদেশ মেনে শিবকে গুহায় ঢুকতে দেয়নি গণেশ। ফলে প্রচণ্ড রেগে যান মহাদেব। ক্ষিপ্ত দেবাদিদেব ত্রিশূল দিয়ে গণেশের মাথা ধড় থেকে আলাদা করে দেন। পার্বতী যখন জানতে পারেন, তখন পুত্র গণেশের মৃত্যু হয়েছে। স্বামীর আচরণে ক্রুদ্ধ হয়ে ওঠেন পার্বতী। স্ত্রীকে শান্ত করতে শেষ পর্যন্ত একটি হাতির মাথা গণেশের দেহে বসিয়ে প্রাণ ফিরিয়ে দেন মহাদেব।
অন্য মত অনুসারে, পার্বতী একদিন নন্দীকে দ্বারী নিযুক্ত করে স্নান করতে যান। এমন সময় শিব সেখানে উপস্থিত হলে, তিনি নন্দীকে তিরষ্কার করে পার্বতীর স্নানাগারে ঢুকে পড়েন। পার্বতী অপমানিত ও ক্ষুব্ধ হন। অবশেষে সখি জয়া ও বিজয়ার সঙ্গে পরামর্শ করে তিনি জল থেকে পাঁক তুলে একটি সুন্দর পুত্রের মূর্তি নির্মাণ করেন ও সেই মূর্তিতে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করে তাকে নিজের বিশ্বস্ত অনুচর নিয়োগ করেন। একদিন সেই বালককে দ্বারী নিয়োগ করে পার্বতী স্নান করতে যান। তখন শিব সেখানে উপস্থিত হন। বালক শিবকে যেতে বাধা দেয়। এতে ক্ষুব্ধ হন শিব। এনিয়ে শিবের অনুচরদের সঙ্গে তার বাদ ও পরে পার্বতীর ইঙ্গিতে যুদ্ধ বাধে। কিন্তু শিব, তাঁর অনুচর ও সব দেবতাই এই যুদ্ধে পরাজিত হন। তখন নারদের রামর্শে বিষ্ণু বালককে মোহাচ্ছন্ন করেন ও শিব শূলের দ্বারা তাঁর মাথা কেটে দেন। এই কথা জানতে পেরে পার্বতী ক্রুদ্ধ হয়ে শ্বকে বিনষ্ট করতে উদ্যোগী হন। নারদ ও দেবগণ কোনওক্রমে তাঁকে শান্ত করেন। পার্বতী তাঁর পুত্রের পুনর্জীবন দাবি করেন ও ইচ্ছা প্রকাশ করেন যেন এই পুত্র সকলের পূজ্য হয়। কিন্তু বালকের মাথাটি আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। শিব তখন নুচরদেরকে উত্তর দিকে পাঠান এবং যার সঙ্গে প্রথমে দেখা হবে তারই মাথা কেটে নিয়ে আসতে বলেন। রাস্তায় তাদের সঙ্গে প্রথমে একটি হাতির দেখা হয়। ফলে, তারা ওই হাতির মাথা নিয়ে উপস্থিত হন। দেবতারা ওই হাতির মাথা দিয়েই বালককে জীবিত করেন। শেষমেশ, শিব তাঁকে নিজের ছেলে বলে স্বীকার করেন। দেবতাদের আশীর্বাদে বালক সকলের পূজ্য হন ও গণেশ নামে পরিচিত হন। শিব মহাপুরাণ মতে, গণেশের গায়ের রং সবুজ ও লাল। জন্মের পর থেকে গণেশকে 'পার্বতী পুত্র' বলা হত। পরে বাবা ছেলের নাম দেন গণেশ। একটি নয়, গণেশের নাম আছে ১০৮টি। ‘গণেশ’ শব্দের অর্থ হল গণ+ঈশ, অর্থাত্ গণের নেতা।
কথিত আছে, গণেশ চতুর্থীর দিন চাঁদের দিকে তাকাতে নেই। বলা হয়, চন্দ্রদেব নাকি গজাননকে দেখে হাসিতে ফেটে পড়েছিলেন। ক্রুদ্ধ হয়ে গণেশ চাঁদকে অভিশাপ দেন, যদি কেউ গণেশ চতুর্থী থেকে অনন্ত চতুর্দশী পর্যন্ত চাঁদের দিকে তাকায় তাহলে ওই ব্যক্তির জীবনে বিপদ ঘনিয়ে আসবে। পাশাপাশি, জ্যোতিষ শাস্ত্রে চতুর্থী তিথিকে রিক্তা তিথি বলা হয়, সে দিন কোনও শুভ কাজ হয় না। কিন্তু ওই দিন গণেশের জন্ম হওয়ায় চতুর্থীতে রিক্তা তিথির দোষ গ্রাহ্য হয় না। সমস্ত শুভ কাজ করা যায়। পুরাণ মতে, ঋদ্ধি ও সিদ্ধির সঙ্গে বিবাহ বয় গণপতির। তাঁর দুই সন্তান হল ক্ষেম ও লাভ। ১৯৮৩ সালে লোকমান্য তিলক প্রথম সর্বজনীনভাবে গণেশ পুজো শুরু করেন। মহারাষ্ট্র ছাড়াও কর্ণাটক এবং অন্ধ্রপ্রদেশেও ধুমধামের সঙ্গে পালিত হয় গণেশ চতুর্থী। ভারতের বাইরে দিনটি পালিত হয় নেপালে। সংস্কৃত, কন্নড়, তামিল ও তেলুগু ভাষায় বিনায়ক চতুর্থী বা বিনায়ক চবিথি নামেও পরিচিত এই উত্সব। কোঙ্কনি ভাষায় এই উৎসবের নাম চবথ। নেপালি ভাষায়, চথা।
গণপতি বাপ্পাকে নিয়ে উন্মাদনার শেষ নেই আরব সাগরের তীরে। গঙ্গাপাড়ের কলকাতাতেও এখন জমজমাট সেই উৎসব। বাড়ি থেকে বারোয়ারি ... পাড়া থেকে পটুয়া পাড়া---সব জায়গাই জমজমাট হয়ে ওঠে চতুর্থী তিথিতে।
অন্য মত অনুসারে, পার্বতী একদিন নন্দীকে দ্বারী নিযুক্ত করে স্নান করতে যান। এমন সময় শিব সেখানে উপস্থিত হলে, তিনি নন্দীকে তিরষ্কার করে পার্বতীর স্নানাগারে ঢুকে পড়েন। পার্বতী অপমানিত ও ক্ষুব্ধ হন। অবশেষে সখি জয়া ও বিজয়ার সঙ্গে পরামর্শ করে তিনি জল থেকে পাঁক তুলে একটি সুন্দর পুত্রের মূর্তি নির্মাণ করেন ও সেই মূর্তিতে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করে তাকে নিজের বিশ্বস্ত অনুচর নিয়োগ করেন। একদিন সেই বালককে দ্বারী নিয়োগ করে পার্বতী স্নান করতে যান। তখন শিব সেখানে উপস্থিত হন। বালক শিবকে যেতে বাধা দেয়। এতে ক্ষুব্ধ হন শিব। এনিয়ে শিবের অনুচরদের সঙ্গে তার বাদ ও পরে পার্বতীর ইঙ্গিতে যুদ্ধ বাধে। কিন্তু শিব, তাঁর অনুচর ও সব দেবতাই এই যুদ্ধে পরাজিত হন। তখন নারদের রামর্শে বিষ্ণু বালককে মোহাচ্ছন্ন করেন ও শিব শূলের দ্বারা তাঁর মাথা কেটে দেন। এই কথা জানতে পেরে পার্বতী ক্রুদ্ধ হয়ে শ্বকে বিনষ্ট করতে উদ্যোগী হন। নারদ ও দেবগণ কোনওক্রমে তাঁকে শান্ত করেন। পার্বতী তাঁর পুত্রের পুনর্জীবন দাবি করেন ও ইচ্ছা প্রকাশ করেন যেন এই পুত্র সকলের পূজ্য হয়। কিন্তু বালকের মাথাটি আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। শিব তখন নুচরদেরকে উত্তর দিকে পাঠান এবং যার সঙ্গে প্রথমে দেখা হবে তারই মাথা কেটে নিয়ে আসতে বলেন। রাস্তায় তাদের সঙ্গে প্রথমে একটি হাতির দেখা হয়। ফলে, তারা ওই হাতির মাথা নিয়ে উপস্থিত হন। দেবতারা ওই হাতির মাথা দিয়েই বালককে জীবিত করেন। শেষমেশ, শিব তাঁকে নিজের ছেলে বলে স্বীকার করেন। দেবতাদের আশীর্বাদে বালক সকলের পূজ্য হন ও গণেশ নামে পরিচিত হন। শিব মহাপুরাণ মতে, গণেশের গায়ের রং সবুজ ও লাল। জন্মের পর থেকে গণেশকে 'পার্বতী পুত্র' বলা হত। পরে বাবা ছেলের নাম দেন গণেশ। একটি নয়, গণেশের নাম আছে ১০৮টি। ‘গণেশ’ শব্দের অর্থ হল গণ+ঈশ, অর্থাত্ গণের নেতা।
কথিত আছে, গণেশ চতুর্থীর দিন চাঁদের দিকে তাকাতে নেই। বলা হয়, চন্দ্রদেব নাকি গজাননকে দেখে হাসিতে ফেটে পড়েছিলেন। ক্রুদ্ধ হয়ে গণেশ চাঁদকে অভিশাপ দেন, যদি কেউ গণেশ চতুর্থী থেকে অনন্ত চতুর্দশী পর্যন্ত চাঁদের দিকে তাকায় তাহলে ওই ব্যক্তির জীবনে বিপদ ঘনিয়ে আসবে। পাশাপাশি, জ্যোতিষ শাস্ত্রে চতুর্থী তিথিকে রিক্তা তিথি বলা হয়, সে দিন কোনও শুভ কাজ হয় না। কিন্তু ওই দিন গণেশের জন্ম হওয়ায় চতুর্থীতে রিক্তা তিথির দোষ গ্রাহ্য হয় না। সমস্ত শুভ কাজ করা যায়। পুরাণ মতে, ঋদ্ধি ও সিদ্ধির সঙ্গে বিবাহ বয় গণপতির। তাঁর দুই সন্তান হল ক্ষেম ও লাভ। ১৯৮৩ সালে লোকমান্য তিলক প্রথম সর্বজনীনভাবে গণেশ পুজো শুরু করেন। মহারাষ্ট্র ছাড়াও কর্ণাটক এবং অন্ধ্রপ্রদেশেও ধুমধামের সঙ্গে পালিত হয় গণেশ চতুর্থী। ভারতের বাইরে দিনটি পালিত হয় নেপালে। সংস্কৃত, কন্নড়, তামিল ও তেলুগু ভাষায় বিনায়ক চতুর্থী বা বিনায়ক চবিথি নামেও পরিচিত এই উত্সব। কোঙ্কনি ভাষায় এই উৎসবের নাম চবথ। নেপালি ভাষায়, চথা।
গণপতি বাপ্পাকে নিয়ে উন্মাদনার শেষ নেই আরব সাগরের তীরে। গঙ্গাপাড়ের কলকাতাতেও এখন জমজমাট সেই উৎসব। বাড়ি থেকে বারোয়ারি ... পাড়া থেকে পটুয়া পাড়া---সব জায়গাই জমজমাট হয়ে ওঠে চতুর্থী তিথিতে।
- Subscribe: https://www.youtube.com/c/RAJATKANTIBERA
- Blog: http://rajatkb.blogspot.com
- Google Plus: https://plus.google.com/u/0/
- Linkedin: https://www.linkedin.com/in/rajatkanti-bera-275134139/
- Facebook: https://www.facebook.com/rajatkanti.bera
No comments:
Post a Comment