‘নবমী নিশি পোহালো কী করি কী করি বল,
ছেড়ে যাবে প্রাণের উমা, দেখ না বিজয়া এল।’
যাও উড়ে নীলকণ্ঠ পাখি...। সৌজন্যে - গুগল ইমেজ |
মেনকার কাতর প্রার্থনা আর মিনতি সত্ত্বেও পোহায় নির্মম নবমী নিশি। এবার স্বামীর ঘরে ফিরে যাবে উমা। কিন্তু তা কিছুতেই বিশ্বাস করতে চাইছে না মেনকার মন। তাই তিনি জানতে চান,
‘সত্যি নাকি যাবি আমার পাষাণপুরী শ্মশান করে,
আবার কবে দেখা হবে, দেখি বারেক নয়ন ভরে।’
দশমীতে দুর্গা পূজার শেষ। মায়ের বিসর্জন। শাস্ত্র মতে, এই দিন পিতৃগৃহ ছেড়ে দেবী পাড়ি দেন স্বামীগৃহ কৈলাসের দিকে। পৌরাণিক মতে, নীলকণ্ঠ পাখি উড়ে গিয়ে কৈলাসে শিবের কাছে উমার ফিরে যাওয়ার বার্তা পৌঁছে দেয়। বিসর্জনের আগে তাই নীলকণ্ঠ পাখি ওড়ানো প্রচলিত রীতি। কবিয়ালের গানে আছে,
‘যাও উড়ে নীলকণ্ঠ পাখি, যাও সেই কৈলাসে,
দাও গো সংবাদ তুমি, উমা বুঝি ঐ আসে।’
কলকাতার বহু বনেদি বাড়িতেই দীর্ঘ দিন ধরে এই রীতি চলে আসছে। এই পাখি কেনাবেচা নিয়ে কড়া আইন থাকলেও পুজো এলেই চোরা পথে শুরু হয় নীলকণ্ঠ পাখির বেচাকেনা। যাঁরা আইন মানেন, তাঁরা দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাতে ব্যবহার করেন মাটির তৈরি পাখি।
কিন্তু দিনটিকে ‘বিজয়া দশমী’ বলা হয় কেন?
কোনও ‘বিজয়’-এর ইঙ্গিত কি লুকিয়ে আছে দিনটির মধ্যে? না কি শুধুই ‘বিজয়া দশমী’? তিথি মেনে উমাকে ভাসিয়ে দেওয়া জলে! বিদায়ের ব্যথা!
‘দশমী’ মানে আশ্বিন মাসের শুক্ল পক্ষের দশমী তিথি। কিন্তু এই তিথিকে ‘বিজয়া’ বলা হয় কেন, তার ব্যাখ্যা খুঁজতে গেলে সামনে আসে একাধিক প্রচলিত কাহিনি। পুরাণ মতে, আশ্বিন মাসের কৃষ্ণা চতুর্দশী তিথিতে আবির্ভূতা হন দেবী। মহিষাসুর বধ সংক্রান্ত কাহিনিতে বলা হয়েছে, মহিষাসুরের সঙ্গে ১০ দিন ৯ রাত যুদ্ধ করার পরে দশম দিনে তার বিরুদ্ধে বিজয় লাভ করেন দেবী দুর্গা। বিজয়া দশমী দেবীর সেই বিজয়কেই চিহ্নিত করে।
- Subscribe: https://www.youtube.com/c/RAJATKANTIBERA
- Blog: http://rajatkb.blogspot.com
- Google Plus: https://plus.google.com/u/0/
- Linkedin: https://www.linkedin.com/in/rajatkanti-bera-275134139/
- Facebook: https://www.facebook.com/rajatkanti.bera
No comments:
Post a Comment