Saturday, September 30, 2017

Vijaya Dashami and Dashera reveres either Durga or Rama's victory over evil

অশুভ শক্তির প্রতীক রাবণ...।

দশমীতেই কেন 

রাবণকে জ্বালিয়ে 

পালিত হয় দশেরা?


‘দশেরা’ শব্দটি এসেছে সংস্কৃত ‘দশহর’ বা ‘দশহরা’ শব্দ থেকে৷ 
দশ + অহ = দশারহ = দশহরা। ‘অহ’ শব্দের অর্থ দিন। ‘দশ’ ‘অহ’ মানে দশম দিন। ‘দশেরা’ হল দেবীপক্ষের দশম দিন বা নবরাত্রির দশম দিন। ৯ রাত ১০ দিন ধরে অবিরাম যুদ্ধ করে দেবী দুর্গা দশম দিনে মহিষাসুরকে বধ করেন। পাশাপাশি, দিনটি দশানন রাবণের মৃত্যুকেও সূচিত করে। অশুভ শক্তির হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার কথা বলে৷ এই দিনই লঙ্কায় দশানন রাবণকে হারিয়ে রাম যুদ্ধ জয় করে সীতাকে উদ্ধার করেন। ‘দশহরা’ শব্দের অর্থও তাই। ‘দশ’ মানে দশানন রাবণ, আর ‘হরা’ মানে হার। তাই এই দিন একদিকে যেমন দেবীর জয়ের দিন। অন্যদিকে, দশাননের পরাজয়ের দিন। উমার জয়কেই ভারতবাসী উদযাপন করে মা দুর্গার পুজো করে। মহিষাসুরই হোন আর রাবণই হোন, এই দিনটি আসলে অশুভ শক্তির পরাজয়কেই চিহ্নিত করে। 




অশুভ শক্তির বিনাশ করে শুভর সূচনাই হল ‘দশেরা’। অশুভ শক্তির প্রতীক রাবণ দহনের মাধ্যমে পালিত উৎসব হল ‘দশেরা’৷ শাস্ত্রজ্ঞরা বলেন, সংস্কৃত ‘দশ’ শব্দের অর্থ ‘সূর্যের অনুপস্থিতি’ এবং ‘হর’ শব্দটির অর্থ ‘পরাজয়’। ‘দশেরা’ শব্দে লঙ্কাধিপতি রাবণের সাম্রাজ্যের সূর্যাস্ত বা পতনকেই বোঝানো হয়। একই সঙ্গে মা দুর্গার হাতে মহিষাসুরের পরাজিত হওয়াকে বোঝায় ‘বিজয়া দশমী’। রামায়ণে আছে, আশ্বিন মাসের শুক্ল পক্ষের দশমী তিথিতে রাবণকে বধ করেছিলেন রামচন্দ্র। রাবণ বধের পরে আশ্বিন মাসের ৩০ তম দিনে অযোধ্যা প্রত্যাবর্তন করেন রাম, সীতা ও লক্ষ্মণ। রাবণ-বধ ও রামচন্দ্রের এই প্রত্যাবর্তন উপলক্ষেই যথাক্রমে দশেরা ও দীপাবলি পালিত হয়। 

রাবণ-বধের প্রস্তুতি...।
মহাভারতে আছে, বারো বছর অজ্ঞাতবাসের শেষে আশ্বিন মাসের শু‌ক্লা দশমীতেই পাণ্ডবরা শমিবৃক্ষে (শমি হল বাবলা জাতীয় গাছবিশেষ বা শাঁই গাছ। যার কাঠ দিয়ে যজ্ঞের আগুন জ্বালা হয়) লুকিয়ে রাখা তাঁদের অস্ত্র পুনরুদ্ধার করেন এবং ছদ্মবেশমুক্ত হয়ে নিজেদের পরিচয় ঘোষণা করেন।  




উত্তর ও মধ্য ভারতের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে সাড়ম্বরে পালিত হয় ‘দশেরা’। ‘দশেরা’ অথবা ‘বিজয়া দশমী’— যে নামেই ডাকা হোক না কেন, বিশেষ এই দিনটির সঙ্গে যুক্ত ১০ সংখ্যা। নবরাত্রি ব্যাপী দেবীশক্তির আরাধানা শেষ হয় দশম দিনে। বিশ্বাস, অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে শুভশক্তির সংগ্রাম দশম দিনে পূর্ণতা পায়। কৃষিপ্রধান দেশ ভারতে ১০ দিন ব্যাপী উৎসব ছিল ধানকে ঘিরে। ‘ব্রীহিধান্য’ নামের এক ফসলকে ঘিরেই অনুষ্ঠিত হত শারদোৎসব। বেঁচে থাকার সব থেকে প্রয়োজনীয় উপকরণ অন্নকে ঘরে তোলার সময়ে যাবতীয় অশুভ শক্তির বিনাশ চাইত গৃহস্থ। তাই বোধ হয় দিনটির সঙ্গে যুক্ত হয় মহিষাসুর বধ বা রাবণ বধের কাহিনি। রাবণের অসৎ কর্মগুলিকে অগ্নিতে নিক্ষেপ করতেই যেন প্রতীকী রাবণ-দহন পালিত হয় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। অহঙ্কার এবং দর্পের প্রতিমূর্তি রাবণকে বিনাশ করে এক বিনম্র জীবনকে বেছে নেওয়ার কথা বলে ‘দশেরা’ উৎসব।

No comments:

Post a Comment

Popular Posts

বাংলার ঘরে ঘরে আজ শিবরাত্রি পুরাণ মতে, শিবকে পতি রূপে পাওয়ার জন্য রাত জেগে উপবাস করে শিবের আরাধনা করেছিলেন দেবী পার্বতী৷ তারপর থেকেই ...