Saturday, February 22, 2020


বাংলার ঘরে ঘরে আজ শিবরাত্রি



পুরাণ মতে, শিবকে পতি রূপে পাওয়ার জন্য রাত জেগে উপবাস করে শিবের আরাধনা করেছিলেন দেবী পার্বতী৷ তারপর থেকেই  প্রবর্তন হয়েছে এই শিবরাত্রি ব্রতের৷ রীতি অনুযায়ী ফাল্গুন মাসের কৃষ্ণ পক্ষে ত্রয়োদশী, চতুর্দশীতে সকাল থেকেই নির্জলা উপবাস করে মহাদেবের মাথায় ফুল বেলপাতা চড়ান কুমারী মেয়েরা৷ পুজোর উপাচারে থাকে দুধ, গঙ্গজল, আকন্দ ফুল, বেলপাতা, ধুতরা ফল প্রভৃতি৷ পুজোর ফলে আপেল, কলা, আঙুরের মতো নানা ধরণের ফলের পাশাপাশি দেওয়া হয় পাকা বেলও৷ 

শিবমহাপুরাণ অনুসারে, অতি প্রাচীনকালে বারাণসী তথা কাশীধামে এক নিষ্ঠুর ব্যাধ বা শিকারি বাস করত। সে প্রচুর জীবহত্যা করত। একদিন শিকারে বেরিয়ে তার খুব দেরি হওয়ার জন্য জঙ্গলে পথ হারিয়ে ফেলল। রাতে হিংস্র জন্তুর ভয়ে একটি বেল গাছের উপর আশ্রয় নেয় সে। গাছের নীচে ছিল একটি শিবলিঙ্গ, শিকারির নড়াচড়ায় সারা রাত সেই শিবলিঙ্গটির উপর বেলপাতা পড়তে লাগল। সেটা ছিল শিবরাত্রি। আর শিকারিও ছিল উপবাসী। তার ফেলা বেলপাতাগুলো শিবলিঙ্গের মাথায় 


পড়ার ফলে অজান্তে তার শিবচতুর্দশী ব্রতের ফল লাভ হয়। পরদিন ব্যাধ বাড়ি ফিরে এলে তার খাবার সে এক অতিথিকে দিয়ে দেয়। এর কিছুদিন পরে সেই ব্যাধ মারা গেলে যমদূতরা তাকে নিতে আসে। কিন্তু শিবচতুর্দশী ব্রতের ফল লাভ হওয়ার ফলে শিবদূতরা এসে যুদ্ধ করে যমদূতদের হারিয়ে ব্যাধকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। যমরাজ তখন শিকার করেন, যে শিবচতুর্দশী ব্রত পালন করে তার উপর যমের কোনো অধিকার থাকে না। সে মুক্তিলাভ করে। এইভাবে মর্ত্যলোকে শিবচতুর্দশী ব্রতের প্রচার ঘটে।

সমস্ত ব্রতের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ হল মহাশিবরাত্রি। ব্রতের আগের দিন ভক্তগণ নিরামিষ আহার করেন। রাতে বিছানায় না শুয়ে মাটিতে শোওয়া হয়। ব্রতের দিন তাঁরা উপবাসী থাকেন। রাতে চার প্রহরে শিবলিঙ্গকে দুধ, দই, ঘি, মধু ও গঙ্গাজল দিয়ে স্নান করানো হয়। তারপর বেলপাতা, নীলকন্ঠ, ধুতুরা, আকন্দ, অপরাজিতা প্রভৃতি ফুল দিয়ে পুজো করা হয়। জপ করা হয় ‘ওঁ নমঃ শিবায়’ মহামন্ত্র। কোজাগরী পূর্ণিমার মতো শিবরাত্রিও জাগরণ করা হয়। পালন করা হয় শিবের ব্রতকথা।

মহাশিবরাত্রি পুজো হয় ভারতের বারোটি জ্যোতির্লিঙ্গ- সোমনাথ, মল্লিকার্জুন, মহাকালেশ্বর, ওঙ্কারেশ্বর, কেদারনাথ, ভীমশঙ্কর, বিশ্বেশ্বর, ত্র্যয়ম্বকেশ্বর, বৈদ্যনাথ, নাগেশ্বর, রামেশ্বর ও ঘুশ্মেশ্বর-এ। পূজো উপলক্ষ্যে এই শৈব্যতীর্থগুলিতে ভিড় করেন বহু মানুষ। 

শিবরাত্রি মহিলারা কেন পালন করেন তার কোন একটি কারন নেই। বহু মত প্রচলিত। ব্রত হল কাউকে ভালোবেসে কাছে পাবার বাসনা। হয়তো সেই জন্যই মহিলাদের মধ্যে এতি বেশি জনপ্রিয়। আরও মনে করা হয় যে, শুধু শিবের মতো বর পাবার জন্যই নয় জীবনের সাফল্য আর সমৃধি চেয়েও মেয়েরা এই ব্রত করেন। শিবরাত্রিতে বাবহৃত প্রত্যেকটি উপাদানের উপকারিতা আছে। তাও মহিলাদের শিবরাত্রি করার একটি কারণ। এছাড়া সকলেই তাঁর সংযমশক্তি বাড়াতে চান। মহিলারা এই 
ব্রত করেন কারন তাঁদের বিশ্বাস, এর দ্বারা সংযম শক্তি বাড়ে। প্রত্যেক মহিলাই তাঁদের প্রিয়জন, তাঁদের পরিবারকে অত্যন্ত ভালবাসেন, দায়িত্বের সঙ্গে সামলান। তাই পরিবারের সকলের ভালর জন্য প্রিয়জনের মঙ্গল কামনা করে এই ব্রত করেন। এছাড়াও প্রচলিত আছে যে, শিবরাত্রির ব্রত করলে অশুভ শক্তি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এছাড়াও প্রত্যেকের জীবনে কিছু না কিছু সমস্যা থাকে, এবং মহিলারা  বিশ্বাস করেন ভগবান শিব হলেন সৃষ্টিকর্তা তাই তার কৃপায় সমস্ত সমস্যা দূর সম্ভব। এই বিশ্বাস থেকেও তাঁরা শিবরাত্রি করেন।


• https://www.youtube.com/c/bipskitchentips
• https://www.youtube.com/c/rajatkantibera
• https://www.youtube.com/c/rajgardens
• https://rajatkantisphotography.com
• https://rajatkb.blogspot.com
• Twitter - https://twitter.com/BeraRajatkanti
• Facebook - https://www.facebook.com/rajatkanti.bera
• Instagram - https://www.instagram.com/berarajatkanti/
• Linkedin - https://www.linkedin.com/in/rajatkanti-bera-275134139/

    © All rights of this article and this BLOG reserved for RAJATkanti BERA. Unauthorized use or reproduction of any cause is strictly prohibited.

    3 comments:

    Popular Posts

    বাংলার ঘরে ঘরে আজ শিবরাত্রি পুরাণ মতে, শিবকে পতি রূপে পাওয়ার জন্য রাত জেগে উপবাস করে শিবের আরাধনা করেছিলেন দেবী পার্বতী৷ তারপর থেকেই ...