ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা...
কারও ফোঁটা প্রতিপদে, কারও ফোঁটা দ্বিতীয়ায়৷ ভাইয়েদের মঙ্গলকামনা বাংলার ঘরে ঘরে। সাধারণ থেকে সেলিব্রিটি.... ভাইকে ফোঁটা দেন সকলেই
ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা, যমের দুয়ারে পড়ল কাঁটা।
যমুনা দেয় যমকে ফোঁটা, আমি দিই আমার ভাইকে ফোঁটা॥
যমুনার হাতে ফোঁটা খেয়ে যম হল অমর।
আমার হাতে ফোঁটা খেয়ে আমার ভাই হোক অমর॥
বারো মাসে তের পার্বণের বাংলায় আর এক পার্বণ। ভাইফোঁটা। ঘরে ঘরে ভাইয়ের কপালে ফোঁটা দিয়ে মঙ্গলকামনা। কার্তিক মাসের শুক্লাদ্বিতীয়া তিথিতে (কালীপূজার দুই দিন পরে) এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।
এই উৎসবের আর একটি নাম হল যমদ্বিতীয়া। যম ও তার বোন যমুনা (বা যমী ) সূর্য্যদেব ও ঊষার যমজ সন্তান। কোন এক কার্তিক মাসের শুক্লা দ্বিতীয়া তিথিতে যমুনা দেবী ভাই যমের মঙ্গল কামনায় গভীর ধ্যান মগ্ন হয়ে পূজা করে এবং তার কপালে ফোঁটা দিয়ে দেন। অন্য মতে, নরকাসুর নামে এক দৈত্যকে বধ করার পর যখন কৃষ্ণ তার বোন সুভদ্রার কাছে আসেন, তখন সুভদ্রা তার কপালে ফোঁটা দিয়ে তাকে মিষ্টি খেতে দেন। সেই থেকে ভাইফোঁটা উৎসবের প্রচলন হয়। পশ্চিম ভারতে এই উৎসব ভাইদুজ নামেও পরিচিত। মহারাষ্ট্র, গোয়া ও কর্ণাটকে ভাইফোঁটাকে বলে ভাইবিজ। নেপালে ও পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং পার্বত্য অঞ্চলে এই উৎসব পরিচিত ভাইটিকা নামে। সেখানে বিজয়াদশমীর পর এটিই সবচেয়ে বড় উৎসব।
কেউ ফোঁটা দেন আবিরে, কেউ ফোঁটা দেন শিশিরে। কেউ ভাইকে ফোঁটা পরান চন্দনে কেউ বা ঘি, দই দিয়ে। ফোঁটার মতো খাবার দাবার নিয়েও কত নিয়ম। কেউ ভাইকে পান ছেঁচে খেতে দেন। কারণ, পান চিবোতে ভাইয়ের কষ্ট হতে পারে। আবার কোথাও কোথাও ভাইকে নিমপাতা খাইয়ে বিপদ থেকে রক্ষা করা হয়। সব শেষে অবশ্য এক থালা মিষ্টি। দুপুরে বা রাতে চর্ব্য-চোষ্য-লেহ্য-পেয়।
বছরভর ব্যস্ততা৷ দৌড়ঝাঁপ৷ এক মুহূর্ত নিঃশ্বাস ফেলার সময় নেই৷ কিন্তু, ভাইফোঁটা বলে কথা৷ সময় তো বের করতেই হবে৷ তাই, হাজারো ব্যস্ততা সরিয়ে রেখে আনন্দে মেতে ওঠা৷ চন্দনের ফোঁটায় ভাইয়ের দীর্ঘায়ু কামনা৷
কিন্তু মিষ্টি ছাড়া কি সম্পূর্ণ হয় সেই মঙ্গলকামনা?
ভাইফোঁটার সকাল থেকে দিদিদের লম্বা লাইন পড়ে মিষ্টির দোকানগুলিতে। সারা বছর না মিললেও চিত্রকূট, খাজা, ক্ষীরের লাড্ডুর মতো ট্রাডিশনাল মিষ্টি মেলে শুধু ভাইফোঁটায়। দিদিরা চান, ভাইয়ের মুখ মিষ্টি হোক ট্রাডিশনাল মিষ্টিতে। পাশাপাশি আছে হালফিলের ফিউশন মিষ্টিও। ঠিক যেন সাবেক বনাম থিম পুজোর লড়াই৷
কিন্তু সেই পাতা আসন, সাজানো থালা, হাতপাখার হাওয়ার সময় বদলেছে৷ ব্যস্ত সময়ে বাড়িতে এত আয়োজনের সময়ই বা কোথায়? তাই ভাইয়ের কপালে ফোঁটার বন্দোবস্ত রেস্তোরাঁতেই৷
ভাইফোঁটায় শহরজুড়ে মিষ্টি-ম্যানিয়া হলেও দিদিদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলে বাজার। সব্জি, মাছ, মাংস--- সব কিছুরই আকাশ ছোঁয়া দাম। কিন্তু ভাইফোঁটার দিনে কোনও বাধাই বাধা নয় বোন বা দিদিদের কাছে। ভাইয়ের জন্য বছরের এই দিনটায় সব কিছু করা যায়।
১৪২৬ সনের ভাইফোঁটার দিনক্ষণ -
বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা মতে:
বাংলা তারিখ: ১১ কার্তিক ১৪২৬, মঙ্গলবার।
ইং তারিখ: ২৯/১০/২০১৯।
সময়: প্রতিপদ সকাল ৬টা ১৩ মিনিট পর্যন্ত, পরে দ্বিতীয়া রাত্রি ৩টে ৪৮ মিনিট পর্যন্ত।
গুপ্তপ্রেস পঞ্জিকা মতে:
বাংলা তারিখ: ১১ কার্তিক ১৪২৬, মঙ্গলবার।
ইং তারিখ: ২৯/১০/২০১৯।
সময়: প্রতিপদ ৭টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত, পরে দ্বিতীয়া (৩০/১০/২০১৯) সকাল ৬টা ১২ মিনিট পর্যন্ত।
• https://www.youtube.com/c/bipskitchentips
• https://www.youtube.com/c/rajatkantibera
• https://www.youtube.com/c/rajgardens
• https://rajatkantisphotography.com
• https://rajatkb.blogspot.com
• Twitter - https://twitter.com/BeraRajatkanti
• Facebook -
https://www.facebook.com/rajatkanti.bera
• Instagram -
https://www.instagram.com/berarajatkanti/
• Linkedin - https://www.linkedin.com/in/rajatkanti-bera-275134139/
© All rights of this article and this BLOG reserved for RAJATkanti BERA. Unauthorized use or reproduction of any cause is strictly prohibited.
No comments:
Post a Comment