বাংলার ঘরে ঘরে নীলষষ্ঠী:
নীল ও নীলাবতীর বিবাহের উদ্যাপন
সৌজন্যে - গুগল ইমেজ |
চৈত্র সংক্রান্তির আগের দিন নীলষষ্ঠী। রাজ্যজুড়ে শিব-দুর্গার বিয়ের উদ্যাপন। ভিড় শিবের মন্দিরে মন্দিরে।
বাংলার ঘরে ঘরে নীলষষ্ঠী।
শিব বা নীল এবং নীলাবতী বা দুর্গার বিবাহের উদ্যাপন।
বাংলার ঘরে ঘরে মহিলারা মেতে উঠেছেন শিবের আরাধনায়। ভিড় শিবের মন্দিরে। দক্ষযজ্ঞে দেহত্যাগের পর শিবজায়া পুনরায় সুন্দরী কন্যারূপে নীলধ্বজ রাজার বেলগাছের বাগানে আবির্ভূত হন। রাজা তাঁকে নিজের মেয়ের মতো লালনপালন করেন। নাম দেব নীলাবতী। শিব তাঁকে বিয়ে করার জন্য পাগল হয়ে ওঠেন। ঘটক ভাগ্নে নারদ মুনির কাছে শিবের আর্তি-
‘ভাইগনা যদি উপকারী হও
তবে বিয়া দিয়া আমার প্রাণ বাঁচাও’
নীলকণ্ঠ শিবের সঙ্গে নীলাবতীর বিয়ে দেন রাজা নীলধ্বজ। বাসর ঘরে নীলাবতী শিবকে মোহিত করেন এবং পরে ফুলের সঙ্গে জলে নিক্ষিপ্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। রাজা-রানিও শোকে প্রাণ বিসর্জন দেন। নীলপুজো তাই শিব ও নীলাবতীরই বিবাহ-অনুষ্ঠানের উদ্যাপন। নীলপুজো বা নীলষষ্ঠী হল বাংলার হিন্দু সমাজের এক লৌকিক উৎসব, যা মূলত শিব-দুর্গার বিয়ে নামে পরিচিত। সাধারণত চৈত্র সংক্রান্তির চড়ক উৎসবের আগের দিন নীলপুজো অনুষ্ঠিত হয়। নীল সন্ন্যাসীরা ও শিব-দুর্গার সঙেরা পূজার সময় নীল বা শিবকে সুসজ্জিত করে গীতিবাদ্য সহযোগে বাড়ি বাড়ি ঘোরান এবং ভিক্ষা করেন। নীলের গানকে বলা হয় অষ্টক গান। সারা দিন উপোস থাকার পর ওই দিন সন্ধ্যায় হিন্দু মহিলারা সংসার-সন্তানের মঙ্গল কামনায় প্রদীপ জ্বালিয়ে শিবের পুজো করে উপোস ভাঙেন। পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, নদিয়া, হাওড়া; বাংলাদেশের ময়মনসিংহ, বরিশাল এবং ত্রিপুরার বেশ কিছু এলাকায় অনুষ্ঠিত হয় নীলপুজো।
চৈত্র মাস জুড়ে যাঁরা সন্ন্যাসব্রত পালন করেন, তাঁরা শিবের বরযাত্রী হয়ে বিবাহের আসর মাতাতে আসেন। নিম বা বেল কাঠ থেকে নীলের মূর্তি তৈরি হয়। পুজোয় শিবের চেলা বা ভূত-প্রেতের দেবতাকে পোড়া শোল মাছের ভোগ দেওয়া হয়। বিয়ের পর নীলের গানে থাকে সংসারী হর-পার্বতীর কথা, শিবের কৃষিকাজ, গৌরীর শাঁখা পরা প্রভৃতি এবং ভিখারি শিবের সঙ্গে অন্নপূর্ণা শিবানীর দ্বান্দ্বিক সহাবস্থানের কাহিনি।
- Subscribe: https://www.youtube.com/c/RAJATKANTIBERA
- Blog: http://rajatkb.blogspot.com
- Google Plus: https://plus.google.com/u/0/
- Linkedin: https://www.linkedin.com/in/rajatkanti-bera-275134139/
- Facebook: https://www.facebook.com/rajatkanti.bera
No comments:
Post a Comment